সবার জন্য কুরবানি

কুরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কুরবানি করা ওয়াজিব। এর গোশত বিতরণ করা ও খাওয়া সুন্নত। ঈদুল আজহার নামকরণই করা হয়েছে এ মহান ইবাদতের নামে। আল্লাহ তায়ালা এ দিনে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি কুরবানি করারও হুকুম দিয়েছেন,

فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ (2)

‘সুতরাং তুমি নিজ প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য নামাজ পড় ও কুরবানি দাও।’ (আল-কুরআন, সূরা আল-কাউসার: ১০৮ :০২)।

প্রথমে নামাজের হুকুম, তারপর কুরবানির। যেন বলা হচ্ছে,

‘নামাজের মাধ্যমে প্রথমে আল্লাহ তায়ালার সামনে আত্মনিবেদিত হও, তারপর সে আত্মনিবেদনের নিদর্শনস্বরূপ কুরবানি কর।’

এক হাদিসে আছে, যায়েদ বিন আরকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (সাহাবিগণ) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কুরবানির হাকিকত কী? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এটি তোমাদের পিতা আদম (আ.) -এর সুন্নত’। সাহাবিগণ বললেন, এতে আমাদের কী লাভ? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (কুরবানির পশুর) ‘প্রতিটি লোমের বিনিময়ে তোমাদেরকে একটি করে নেকি দেয়া হবে’। সাহাবিগণ বললেন, ভেড়ার ক্ষেত্রেও কি একই বিধান? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, এরও প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি দেয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৯২৮৩, সুনানে ইবনে মজাহ : ৩১২৭)।

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই মহান ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে,

مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ، فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا.

‘যে ব্যক্তি কুরবানি করার সামর্থ্য রাখে কিন্তু কুরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)

দারিদ্র্যকবলিত বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ কুরবানি দেবার সামর্থ্য রাখে না। আনন্দমুখর ঈদের দিনেও তারা নিরসমনে ক্ষুধার্ত বসে থাকে। এক টুকরো গোশত খাবার ভাগ্যও যেন তাদের নেই। আমরা সবাই তো নিজেদের জন্য কুরবানি করি। আসুন না একবার মানুষের জন্য কুরবানি করি। তবেই তো ‘মানুষ মানুষের জন্য’ প্রবাদটির যথার্থতা ফুটে উঠবে। আমরা প্রতি কুরবানির ঈদে অভাবী ও গরীব মানুষদের জন্য কুরবানি করে থাকি। পার্বত্যাঞ্চলের নওমুসলিমদের জন্যও ঈদের আনন্দ যোগ করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই চেষ্টায় আপনিও আমাদের সহযাত্রী হতে পারেন।  আপনার অর্থকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে নির্দিষ্ট ফান্ডে ব্যয় করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

error: Content is protected !!