ইসলামী পরিভাষা বিশ্বকোষ
ইসলামী পরিভাষা বিশ্বকোষ

ইতিকাফ

ইতিকাফ

ইতিকাফ’ আরবী শব্দ। অর্থ অবস্থান করা।

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় রমাযান মাসের শেষ দশক বা অন্য কোনো দিন জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহ কে রাজি খুশি করার নিয়তে পুরষের জন্য মসজিদে ও নারীদের জন্য ঘরে নামাযের নির্দিষ্ট একটি স্থানে ইবাদাত করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।

ইতিকাফ হচ্ছে রমাযানুল মুবারকের সামগ্রিক কল্যাণ ও বরকত লভের জন্য একটি বলিষ্ঠ সহায়ক শক্তি। রমাযানের প্রথম অংশে কোনও কারণে যদি পূর্ণ আত্মিক প্রশান্তি, স্থির চিত্ততা, চিন্তা ও হৃদয়ের একাগ্রতা, আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন ও তার রহমতের দুয়ারে পড়ে থাকার সৌভাগ্য অর্জিত না হয়, তার জন্য পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা একটি শেষ সুযোগের ব্যবস্থা করেছেন, যেন সে অতি সজেই তার সে অপূরণীয় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে ইতিকাফের মাধ্যমে।

ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেন—

‘ইতিকাফের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে গাইরুল্লাহর মোহনীয় বেড়াজাল থেকে মুক্তি লাভ করে আল্লাহর সাথে পরিপূর্ণ ও গভীর প্রেমময় সম্পর্ক স্থাপন। রমাযানের পবিত্র মাসে আল্লাহর ঘরে নির্জনবাস ও ইতিকাফের মাধ্যমে হৃদয় ও আত্মার এমন অভাবনীয় উৎকর্ষ সাধিত হয় যে, মানুষের হৃদয়ে তখন আল্লাহর যিকির ও তার প্রতি গভীর প্রেম ছাড়া অন্য কিছু স্থান পায় না। মহান প্রতিপালকের ধ্যান-চিন্তা ছাড়া অন্য কোনও চিন্তা-ভাবনাতেই সে উৎসাহ বোধ করে না। তার হৃদয়ের সকল অনুভূতি তখন আল্লাহর নৈকট্য ও সানিধ্য লাভের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ও সহায়ক হয়ে থাকে। মাখলুকের সাথে ঘনিষ্টতা ও গভীরতার পরিবর্তে আল্লাহ তাআলার সাথে ঘনিষ্টতা ও গভীরতা তৈরী হয়। কবরের নিঃসঙ্গ অন্ধকারে—যেখানে কোনও বন্ধু ও সাহায্যকারী থাকবে না—এই সম্পর্কটি এক মহামূল্যবান পাথেয়রূপে কাজে আসবে।’[[1]]

[[1]]  যাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা: ১৮৭

শেয়ার করুন

সূচীপত্র

error: Content is protected !!