‘বাংলাদেশ শরিয়া কাউন্সিল’ হল একটি সেবামূলক অরাজনৈতিক ইসলামী সংস্থা যা চারটি সুন্নি মাযহাবের উপর ভিত্তি করে ইসলামি শরিয়ার সঠিক ব্যাখ্যা অনুসারে মুসলমানদের আইনী বিধি ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে। মুসলিম শিশুর তারবিয়াহ, বিবাহ পরিকল্পনা, দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা, হালাল-হারাম সচেতনতা, পারিবারিক কলহ ও বিবাহবিচ্ছেদ পূর্ব শরয়ী সচেতনা জাগরণসহ নানান ক্ষেত্রে পরামর্শ প্রদান করা এর প্রধান লক্ষ।
আমাদের একাধিক বিভাগকে সমন্নয় করে একটি পূর্ণাঙ্গ শরয়ী কাউন্সিলিং বিভাগ রয়েছে যা নিম্নলিখিত বিষয়ে আপনার যে কোনো সমস্যায় সাহায্য করতে পারে:
বর্তমান সময়ে, সুস্থ ও উন্নত বিবাহিত জীবন পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিবাহ-পূর্ব কাউন্সেলিং বা পরামর্শ নেয়া একান্ত প্রয়োজন। বিবাহ-পূর্ব কাউন্সেলিং-এর সাহায্যে যুবক-যুবতীরা বিয়ের পূর্বেই বিবাহিত জীবনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে পারেন। সাধারণত দেখা যায়, বিয়ের উপযুক্ত যুব বয়সীরা তাদের সঙ্গী কেমন হবে, পরিবারের সদস্যরা কেমন হবে, যৌন জীবন কেমন হবে ইত্যাদি বিষয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন। আবার দেখা যায়, কেউ কেউ কোনো একটা বিষয় নিয়ে ভবিষ্যৎ আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এই কারণেই ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে ভবিষ্যত দম্পতিকে এসকল বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি তাদের কোন প্রকার জটিলতা বা সমস্যা থাকলে চিহ্নিত করে এবং সমস্যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করে স্থায়ী সমাধান দিতে সচেষ্ট হবেন। এ লক্ষকে সামনে রেখে আমাদের রয়েছে প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সেলিং বা বিবাহ-পূর্ব কাউন্সেলিং বিভাগ। যা, ভবিষ্যত দম্পতিকে কোরআন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী বিবাহ সম্পর্কে ইসলামী জ্ঞান প্রদান করবে এবং দায়িত্ব সচেতন করার সাথে সাথে প্রত্যেকের নিজ নিজ কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করবে।
ইসলামে মাদক সেবন নিষিদ্ধ। ইসলামে অন্য যেসব নিষিদ্ধ বা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত বিষয় রয়েছে, সেগুলো থেকে ব্যক্তি চাইলেই সহজে বিরত থাকতে পারে। অর্থাৎ, ইচ্ছা করলে এসব অপরাধ থেকে সরে থাকা যায়। কিন্তু মাদক গ্রহণ এমন এক অপরাধ, যা নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না; বরং মাদকসেবী নিজেই মাদক বা নেশার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। চাইলেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসা যায় না। অর্থাৎ, সে নেশাকে ছাড়তে চাইলেও নেশা তাকে সহজে ছাড়ে না বা ছাড়তে চায় না।
বিভিন্ন অপরাধ পরিত্যাগ করে তওবা করে পবিত্র জীবন যাপন করা সম্ভব, কিন্তু নেশা বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি তওবা করারও সুযোগ পায় না এবং মাদক না ছেড়ে তওবা করলেও তা কবুল হয় না।
মাদক অপরাধের আকর। মাদক হলো নেশা উদ্রেককারী সব বস্তু, যা মানুষের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে দেয়, যার প্রভাবে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করে না। মাদক সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও অপরাধকে উত্সাহিত করে।
ইসলামী শরিয়তের সব ধরনের মাদক বা নেশাদ্রব্য হারাম করা হয়েছে জ্ঞান বা বুদ্ধি–বিবেক সুরক্ষার জন্য। মাদক গ্রহণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা রয়েছে।
ইসলামি বিধানমতে মাদক গ্রহণ হারাম হওয়ার পাশাপাশি তা অপবিত্রও। কোনো মুসলমানের মাদক ব্যবহার করা যেমন হারাম, অনুরূপভাবে তা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণ করা এবং ক্রয়–বিক্রয় করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
বিশ্বশান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য সর্বস্তরে মাদক পরিহার করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও পারিবারিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ শুধু আইনি ও সামাজিক বিষয় নয়, বরং এটি ইমান ও আমলের সঙ্গে সম্পর্কিত অতীব জরুরি বিষয়। আলহামদুলিল্লাহ! মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসার অংশ হিসেবে আপনারা আমদের দক্ষ ও বিজ্ঞ শরয়ী উপদেষ্টার মাধ্যমে পরামর্শ নিতে পারবেন। আমরা প্রয়োজন মনে করলে রোগীকে অপর কোন নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দিবো। আল্লাহ সহায় হলে, আমাদেরও একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে। আর প্রত্যেক ভালো কাজ একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই পরিপূর্ণ করতে পারেন।
বৈবাহিক বিরোধ মানে আইন দ্বারা স্বীকৃত সমস্ত বিবাহ সংক্রান্ত বিরোধ। যেমন, পারিবারিক বিরোধ; বিবাহবিচ্ছেদ; বিবাহবিচ্ছেদ নিষ্পত্তি চুক্তি বাস্তবায়ন; সন্তান রক্ষণাবেক্ষণ; শিশুদের প্রবেশাধিকার বা আবাসনসহ অন্যান্য পারিবারিক বিষয়ে কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী সুপরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
রাগ বা ক্রোধ মানব জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য বিষয়। এই রাগ থেকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সম্মানীত সাহাবাগণও (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) মুক্ত নন। তবে এই রাগ মানুষের জীবনে যেমন নিন্দনীয় বিষয় তেমন সৌন্দর্যের বিষয়ও বটে। তবে রাগ ততক্ষণই সৌন্দর্য হিসেবে অবস্থান করে যতক্ষণ তা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। একজন মুসলিম যখন দেখে—আল্লাহদ্রোহী কাজ হচ্ছে, দ্বীন ইসলাম বা নবিজির অবমাননা হচ্ছে, অন্যায়ভাবে কোনো মুসলিমের উপর জুলুম হচ্ছে—তখন সে রাগান্বিত হবে এটাই তার ঈমানের দাবী। আর এসব ক্ষেত্রে রাগ এতটাই প্রশংসনীয় যে, এজন্য ঐ মুসলিম আল্লাহর নিকট পুরস্কৃত হবেন। দুনিয়াতে বহু অনিষ্টের কারণ হলো রাগ বা ক্রোধ। মানুষ এ রাগের বশবর্তী হয়ে অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কাজ করে ফেলে। এ রাগের ফলে মানুষ সম্মানিত হওয়ার পরিবর্তে লজ্জা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। একটু অনুসন্ধান করলে দেখতে পাবো, আমাদের জীবনের অনেক সুযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে এই রাগ বা ক্রোধ। রাগের মাথায় কারো কথা বা কাজের মূল্যায়ন করলে তাতে ইনসাফ করা সম্ভবপর হয় না।
আমাদের রয়েছে, রাগের বাস্তবতা এবং রাগ নিয়ন্ত্রণের বিবিধ উপায় উপকরণ সম্পর্কে অভিজ্ঞ শরয়ী উপদেষ্টা। যাঁরা বি-ইযনিল্লাহ! আপনাকে রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে শেখাবে, দেখাবে রাগকে কাবু করে জীবনের কাঙ্খিত সফলতা সোপান।
ঝগড়া-বিবাদ নিরসন ও মধ্যস্থতা হল, দুই বা তার বেশি ব্যক্তির মাঝে বাকযুদ্ধ নিরসন প্রচেষ্টা। যেখানে সকলপক্ষ, সকলের সম্মতিক্রমে নিরপেক্ষ ব্যক্তির সাথে দেখা করে তাদের মতপার্থক্যের বিষয়ে আলোচনা করবে। আলহামদুলিল্লাহ! আমাদের বিজ্ঞ শরিয়া উপদেষ্টাগণ আপনাদের ঝগড়া-বিবাদ নিরসন ও মধ্যস্থতার প্রস্তুত রয়েছেন।
যে কোন সেবা গ্রহণের জন্য অনুগ্রহ করে ইমেল করুন: media.ipaedia@gmail.com
অথবা যোগাযোগ করুন: 01600351707 (ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম)
যোগাযোগের সময়:
সকাল: ১০.০০ – ১২.৩০
দুপুর: ২.৩০ – ৩.৪৫
রাত: ৮.০০ -১০.০০