সিরাত বিশ্বকোষ
সিরাত বিশ্বকোষ

২৪. (১২) সারিয়্যা আল-কুররা বি’র মাউনা  – Expedition of Bir Maona

২৪. (১২) সারিয়্যা আল-কুররা বি’র মাউনা – Expedition of Bir Maona

১২. সারিয়্যা আল-কুররা বি’র মাউনা

 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কর্তৃক প্রেরিত সারিয়্যা : ১২

তারিখ মুহাররম ৪ হিজরি, জুলাই ৬২৫ খ্রি.
অবস্থান বির মাউনা
ফলাফল মুসলমানদের হত্যা করা হয়।

 

 

বিবাদমান পক্ষ
মুসলিম আমের ইবনে তুফাইল ও অন্যান্য
শক্তি
৪০ বা ৭০ অজানা অজানা
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
৪০ বা ৭০ অজানা ২ জন

ভৌগোলিক অবস্থান

 

বির শব্দটি একবচন, এটির বহুবচন ‘আবার’। আলোচ্য শব্দের আভিধানিক অর্থ কূপ। ‘মাউন’ নজদ তথা বর্তমান সৌদি আরবের একটি বিশেষ স্থানের নাম। এই স্থান তৎকালীন আরবি গোত্র বনু আমের ও বনু সুলাইম-এর অঞ্চলের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এই কূপের উপর বনু সুলাইমের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত ছিল বলে জানা যায়। কূপটির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলও কালক্রমে বির মাউনা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। কূপটির নিকট হিজরি চতুর্থ সালের সফর মাসের ২০ তারিখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদাসম্পন্ন সাহাবিগণের, যাদের অধিকাংশ হাফেজে কুরআন ছিলেন, একটি প্রতিনিধি দল শহিদ হয়েছিলেন। কাফেররা যড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে নিবেদিত মহান সাহাবিদের এই কূপের নিকটবর্তী স্থানে নির্মমভাবে শহিদ করে।[1]

 

মানচিত্র (২৫) : বিরে মাউনা ঘটনা স্থল

 

ঘটনার বিবরণ

 

উহুদের যুদ্ধে (৩ হিজরি মোতাবেক ৬২৫ খ্রি.) মুসলমানগণ সাময়িক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন। এই সুবাদে খোদাদ্রোহী কাফের ও মুনাফিকগণের ঔদ্ধত্য অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তাই তারা দীন ইসলামকে শৈশবেই গলা টিপে হত্যার হীন প্রচেষ্টায় মেতে ওঠে। এই উদ্দেশ্যে তারা নানা প্রকার ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করে। তারা পবিত্র কুরআন হিফজকারী হাফেজ ও ইসলামি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষ ব্যক্তিবর্গকে হত্যার হীন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই হীন পরিকল্পনার শিকার হিসেবে ইয়াওমুর রাজি -তে শাহাদাতবরণকারী শহিদগণকেও গণ্য করা হয়।[2]

চতুর্থ হিজরির সফর মাসের কোনো একদিন বা আমেরের প্রতাপশালী নেতা আবু বারাআ আমের ইবনে মালিক ইবনে জাফর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে উপস্থিত হন। তিনি ইবুল-আসিন্না অর্থাৎ বর্শার ক্রীড়াবিদ বা বর্শা খেলায় পারদর্শী নামেও পরিচিত ছিলেন। মদিনায় এসে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র মুখে ইসলামের আহ্বান শুনে প্রথমে চুপ রইলেন, কোনো প্রকার অনুকূল সাড়াও দিলেন না, আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই আহ্বান প্রত্যাখ্যানও করলেন না। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দুটি ঘোড়া ও দুটি উট উপহার দিতে চাইলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, ‘আমি কোনো মুশরিকের উপঢৌকন গ্রহণ করি না।’ পরে তিনি আল্লাহর রাসুলের খেদমতে আরয করলেন, ‘ইসলাম আমার কাছে বেশ ভালো লাগে; কিন্তু আমার আপন গোত্রীয় লোকদের ছেড়ে একা ইসলামে দীক্ষিত থেকে আমার সাহস হয় না। যদি আপনি দয়া করে আমার সাথে কয়েকজন সুদক্ষ মুবাল্লিগ পাঠিয়ে দেন, হয়তো তাদের উপদেশ শুনে আমার গোত্রের লোকগণ দীন ইসলাম গ্রহণ করতে পারে।’[3]

আরো পড়ুন : গাজওয়া বদর আল-আখিরা – Expedition of Badr al-Maw’id

আরো পড়ুন : গাজওয়া বনি নাজির – Invasion of Banu Nadir

আরো পড়ুন : গাজওয়া বনু কায়নুকা – Invasion of Banu Qaynuqa 

আবুল বারাআর ভ্রাতুষ্পুত্র আমের ইবনে তুফায়ল ছিল বনি আমের গোত্রের সরদার। সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইতিপূর্বে বলেছিল, ‘হে মুহাম্মাদ! আপনি নিম্নোক্ত তিনটি শর্তের যেকোনো একটি গ্রহণ করতে পারেন,

১. আপনি পল্লি অঞ্চলের নেতৃত্বভার গ্রহণ করুন, আর আরবের শহরসমূহ আমার অধিকারে ছেড়ে দিন।

২. নতুবা সমগ্র আরবের ওপর আপনারই অধিকার থাকুক; কিন্তু আপনার ওফাতের পর সারা আরব আমার অধিকারে আসবে ও আমি আপনার খলিফা হবো।

৩. অন্যথায় আমি গাতফান গোত্রের দুই হাজার দুর্ধর্ষ ও প্রশিক্ষিত যোদ্ধা সহকারে আপনার উপর আক্রমণ করতে বাধ্য হবো।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উক্ত প্রস্তাবগুলোর কোনো একটিতেও সম্মতি দেননি। এজন্য তিনি তার সম্বন্ধে আশঙ্কা পোষণ করতেন।[4] উক্ত কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবুল বারাআর আবেদনের উত্তরে বললেন, ‘আমি নজদবাসীদের ব্যাপারে শঙ্কামুক্ত নই। তাদের পক্ষ থেকে আমার সাহাবিগণের জন্য সমূহ বিপদের আশঙ্কা হচ্ছে।’ আবুল বারাআ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশ্বস্ত করার জন্য বললেন, ‘জনাব! কোনো ভয় নেই। সেখানে আমরাই নেতৃস্থানীয়, বনু আমেরের সরদার আমের ইবনে তুফাইল আমারই ভ্রাতুষ্পুত্র। আমি আপনার মুবাল্লিগগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। প্রয়োজনে তাদের সাহায্য করার আশ্বাস দিচ্ছি। আপনি নিঃসঙ্কোচে তাদের আমার সাথে প্রেরণ করতে পারেন।’

একজন প্রভাবশালী গোত্রপতি এহেন প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় এবং সাহায্য করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্বস্ত হলেন। তিনি নজদ অভিমুখে সত্তরজন বিশিষ্ট সাহাবির একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করলেন। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মুনজির ইবনে আমর আল-খাজরাজি।[5] আল-মুহাব্বার গ্রন্থে উক্ত প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা ত্রিশ বলে উল্লিখিত রয়েছে। তন্মধ্যে ২৬ জন আনসার ও ৪ জন মুহাজির।[6] তবে আনসাবুল আশরাফ[7] গ্রন্থে এ সংখ্যা চল্লিশ অথবা সত্তর বলে উল্লেখ আছে। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন। তারা সারাদিন জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রয় করতেন এবং সেই আয় দ্বারা সুফফার নিঃসম্বল সাহাবিগণের পানাহারের সংস্থান করতেন। আর সারা রাত কুরআন তেলাওয়াত ও শিক্ষাদান এবং নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতে মশগুল থাকতেন। তারা সকলেই হাফেজে কুরআন ছিলেন।[8] তাদের যাত্রার প্রাক্কালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু আমেরের নেতা আমের ইবনে তুফাইলের নিকট একটি পত্র লিখে তাদের হাতে দেন।

আবুল বারাআ আল্লাহ প্রেমিক কারি সাহাবিগণের এ প্রতিনিধি দলের পূর্বেই নজদ অভিমুখে যাত্রা করলেন এবং এই দলকে তিনি যে নিরাপত্তা দিয়েছেন, তা নিজ গোত্রকে অবহিত করলেন। এই প্রতিনিধি দল বির মাউনা নামক স্থানে পৌঁছালে তাদের মধ্য থেকে হারাম ইবনে মিলহান নাজ্জারিকে বনু আমেরের সরদার আমের ইবনে তুফাইলের নিকট পাঠিয়ে দিলেন। হারাম তার সাথে আরও দুজন সাহাবিকে নিয়ে পত্র পৌঁছাতে চললেন। আমের বংশের সরদারের বাড়ির নিকটে গিয়ে হারাম তার সাথিদ্বয়কে বললেন, ‘তোমরা এখানেই দাঁড়িয়ে থাকো, আমি একাই যাই। কারণ, বিপদ হলে তিনজনের প্রাণ দিয়ে কী লাভ? অন্যথায় তোমরা পরে এসে আমার সাথে মিলিত হয়ো। আর যদি তারা আমাকে হত্যা করে, তাহলে তোমরা অবশিষ্ট লোকদের কাছে ফিরে যাবে।’[9]

আরো পড়ুন : গাজওয়া তায়েফ – Siege of Ta’if

আরো পড়ুন : গাজওয়া দুমাতুল জানাদাল – Expedition of Dumat al-Jandal

আরো পড়ুন : গাজওয়া ফাতহ মক্কা (মক্কা বিজয়) – Conquest of Mecca

হারাম পত্র নিয়ে আমের ইবনে তুফাইলের নিকট উপস্থিত হলেন। দুর্বৃত্ত আমের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পত্রটি পড়েই নিকটস্থ জনৈক অনুচরকে আঘাত করার জন্য ইঙ্গিত করল। অনুচরটি ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র মহানবীর দূতকে পশ্চাৎ দিক থেকে বর্শা মেরে হত্যা করে ফেলল। নিহত হওয়ার প্রাক্কালে মহানবীর দূত হারাম উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠলেন, ‘আল্লাহু আকবার, কাবার প্রভুর শপথ! আমি সফল হলাম।’

অতঃপর আমের ইবনে তুফাইল অবশিষ্ট মুসলিম মুবাল্পিগদেরকে আক্রমণ করার জন্য বনু আমেরকে নির্দেশ দিল। কিন্তু সেই গোত্রেরই অপর নেতা ও সম্মানিত ব্যক্তি আবুল বারাআ উক্ত প্রতিনিধি দলের দায়িত্ব ও নিরাপত্তাভার গ্রহণ করেছেন এ বিষয়ে পূর্বেই অবহিত ছিল বলে বনু আমের তাদের সরদারের আহ্বানে সাড়া দিল না। কিন্তু সে তাতেও নিবৃত্ত হলো না। পার্শ্ববর্তী সুলাইম বংশের বনু উসায়্যা, বনু-রিল ও বনু যাকওয়ানকে প্ররোচিত করে প্রায় ২০০ জনের এক বিরাট সৈন্যবাহিনী সংগ্রহ করে বির মাউনার দিকে গেল। তাদের দেখে বীর সাহাবিগণ তাদের বিশ্রামস্থল থেকে বের হয়ে এলেন। তারা বললেন, ‘তোমরা আমাদের আক্রমণ করছো কেন? আমরা তো যুদ্ধ করতে আসিনি। আমরা এখানে অবস্থান করতেও চাই না।’ কিন্তু নরপিশাচগণ তাদের কোনো কথাই শুনল না। অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত এই বাহিনী নিরস্ত্র মুসলিমদের এই মুষ্টিমেয় জামাতের উপর সাঁড়াশি আক্রমণ করল। তারা প্রাণপণে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেন বটে; কিন্তু পেরে উঠলেন না। শেষ পর্যন্ত তারা সকলেই শহিদ হলেন। শুধু কাব ইবনে জায়েদ নাজ্জারি নামক একজন সাহাবি কঠোরভাবে আহত হয়ে নিহতদের সাথে পড়ে ছিলেন। কাফেররা তাকে মৃতজ্ঞান করে ফেলে রাখল। তিনি কোনোমতে বেঁচে যান ও পরে খন্দকের যুদ্ধে শহিদ হন।[10]

ওয়াকিদির বর্ণনামতে আমর ইবনে উমাইয়া আদ-দামরি ও মুজির ইবনে উকবা এবং হারেস ইবনুস সিম্মা আনসারি আল-বারি নামক দুজন সাহাবি নিজ দল থেকে দূরে উটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তারা দূর থেকে ধূলা উড়তে দেখে এদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন। আরও দেখলেন, আকাশে পাখি জড়ো হয়েছে। বিষয়টি বুঝতে তাদের আর বাকি রইল না। আমর বললেন, ‘চলো আমরা মদিনায় গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সংবাদ জানাই।’ মুজির বললেন, ‘আমরা না গেলেও সংবাদ পৌঁছা বাকি থাকবে? কিন্তু সাথিগণ সকলে শহিদ হয়ে আল্লাহর দরবারে উচ্চ মর্যাদা লাভ করেন। শুধু আমরা দুজন এই সৌভাগ্য লাভ থেকে বঞ্চিত হবো কেন? অগ্রসর হও, শত্ৰুদের আক্রমণ করো।’

অতঃপর তারা অগ্রসর হলেন। সেখানে উপনীত হয়ে দেখতে পেলেন, তখন নরপিশাচ জালেমদের তরবারি নিস্পাপ সাথি সাহাবিগণের রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেছে। হানাদার অশ্বারোহীগণ তখনো দাঁড়িয়ে আছে। বীর বিক্রমে অসি চালিয়ে তারা শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। দুজন শত্রুকে হত্যা করে বন্দি হলেন। মুনজির শহিদ হতে না পেরে বিচলিত হলেন এবং বন্দি অবস্থায় দুজন কাফেরকে হত্যা করে কাফেরদের হাতে শহিদ হলেন।[11] শুধু আমর ইবনে উমাইয়া আদ-দারি জীবিত রইলেন। শত্রুপক্ষের নেতা আমের ইবনে তুফাইল যখন জানতে পারল, ইনি মুদার বংশের লোক, তখন সে তাকে হত্যা করা নিরাপদ মনে না করে তার মাথার সম্মুখ দিকে একগুচ্ছ চুল কেটে তাকে এই বলে ছেড়ে দিল, ‘কোনো কারণে একটি গোলামকে মুক্তি দেওয়া আমার মায়ের মানত ছিল। সুতরাং আমি তোমাকে আমার মায়ের পক্ষ থেকে মুক্তি দিয়ে এই মানত পূর্ণ করলাম।’[12]

বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গ্রন্থসূত্রে বির মাউনার লোমহর্ষক ঘটনায় শাহাদাতপ্রাপ্ত কয়েকজন সাহাবির নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো,

১. সাদ ইবনে আমর ইবনে কাব আন-নাজ্জারি আল-খাজি আল-আনসারি;

২. হারেস ইবনু সিম্মা ইবনে আমর আন-নাজ্জারি আল-বদরি;

৩. কুতবা ইবনে আবদ আমর আন-নাজ্জারি;

৪. সুলাইম ইবনে মিল্হান আন-নাজ্জারি;

৫. খালিদ ইবনে আবু সাসা আন-নাজ্জারি;

৬. আল-মুনজির ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে উকবা আল-আওসি আল-আনসারি;

৭. রাফে ইবনে ওয়াররাক আল-খুজায়ি;

৮. উরওয়া ইবনে কায়সান;

৯. হাকাম ইবনে কায়সান;

১০. রাফে ইবনে বুদাইল ইবনে ওয়ারাকা আল-খুজায়ি;

১১. হারাম ইবনে মিহান আন-নাজ্জারি;

১২. আমের ইবনে আল-বুকাইর;

১৩. মুনজির ইবনে দামরা ইবনে খুনাইস আল-খাজরাজি আস-সাইদি, আল-বারি, আল-আকাবি;

আরো পড়ুন : গাজওয়া উহুদ – Battle of Uhud

আরো পড়ুন : গাজওয়া ওয়াদিল কুরা – Third Expedition of Wadi al Qura

আরো পড়ুন : গাজওয়া খায়বার – Battle of Khaybar

১৪. আমের ইবনে ফুহায়রা আল-বারি;

১৫. নাফি ইবনে বুদাইল;

১৬. মুআজ ইবনে মাইস;

১৭. তুফাইল ইবনে সাদি;

১৮. আনাস ইবনে মুআবিয়া;

১৯. আবু শায়খ উবাই ইবনে সাবিত;

২০. আতিয়্যা ইবনে আবদ আমর;

২১. মালিক ইবনে সাবিত;

২২. সুফিয়ান ইবনে সাবিত। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন।[13]

 আমর ইবনে উমাইয়া শত্রুর হাত থেকে মুক্তি লাভ করে মদিনাভিমুখে রওনা হলেন। পথিমধ্যে বনু সুলাইমের অধিকারভুক্ত কারকারাতুল কুদর নামক স্থানে পৌঁছিয়ে একটি গাছের নিচে বিশ্রাম গ্রহণ করেন। ইত্যবসরে সেখানে বনু আমের বংশের দুজন লোক উপস্থিত হন। তাদের নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পত্র ছিল, কিন্তু আমরের সেকথা জানা ছিল না। আগন্তুকদ্বয় পথ-শ্রান্তির কারণে অল্পক্ষণের মধ্যেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন। আমর ইবনে উমাইয়ার অন্তরে তার শহিদ সাথিদের বেদনা বিধুর স্মৃতি জাগরুক ছিল। তাই তার অন্তরে প্রতিশোধ-স্পৃহা জেগে উঠল। তিনি নিদ্রামগ্ন উক্ত আগন্তুকদ্বয়কে তরবারির আঘাতে হত্যা করলেন। শত্রুবংশের লোকদুটিকে হত্যা করে তার অন্তরের দুঃখ কিছুটা প্রশমিত হলো। তিনি মদিনায় পৌঁছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সমস্ত ঘটনা শোনালেন। প্রাণপ্রিয় ভক্ত ও সত্যের পথে নিবেদিতপ্রাণ কারি ও হাফেজে কুরআন দলের হৃদয়বিদারক ঘটনা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই মর্মাহত হলেন। তবু ন্যায়নিষ্ঠার প্রতীক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমর ইবনে উমাইয়া কর্তৃক বনু আমেরের দুই ব্যক্তিকে হত্যা করার বিষয়টি সমর্থন করলেন না। আমের ইবনে তুফাইল মুসলিম দূত ও নিরপরাধ সত্তরজন সাহাবিকে হত্যা করেছিল, সেই পাপিষ্ঠই আন্তর্জাতিক নীতি বিরোধী হওয়ার দোহাই দিয়ে উক্ত দুজন নিহত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ দাবি করল। আল্লাহর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দাবি স্বীকার করে নিলেন এবং কোনো প্রকার আপত্তি না করে নিহতদের রক্তপণ বাবদ উপযুক্ত অর্থ ও তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত সমুদয় সামগ্রী বনু আমেরের নেতার নিকট পাঠিয়ে দিলেন।[14]

বির মাউনার ঘটনার কিছুদিন পূর্বে (চতুর্থ হিজরির সফর মাসের প্রারম্ভে) আর-রাজি প্রান্তরের হৃদয়বিদায়ক ঘটনায় দশজন বিশিষ্ট সাহাবি শহিদ হয়েছিলেন।[15] এই কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দারুণ ব্যথিত ছিলেন। তাই প্রায় এক মাস অবধি তিনি প্রতি ওয়াক্ত নামাজে বির মাউনা ও রাজি প্রান্তরের শহিদগণের হন্তাদের প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করতে থাকেন। সহিহ বুখারিতে[16] এই বিষয়ে বিশদ বর্ণনা রয়েছে। যেমন, আনাস ইবনে মালিক রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘বির মাউনায় যারা সাহাবিগণকে হত্যা করেছিল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাস পর্যন্ত ফজরের নামাজে তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করলেন। এভাবে দোয়া কুনুত পড়া শুরু হয়। এর পূর্বে আমরা দোয়া কুনুত পড়তাম না।’

বির মাউনার বিষাদপূর্ণ ঘটনার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাস পর্যন্ত সাহাবিদের হত্যাকারীদের উপর ফজরের নামাজের রুকুর পর বদদোয়া এবং অভিসম্পাত করেন। বুখারি শরিফমুসলিম শরিফে আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বির মাউনার সম্পূর্ণ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই বিষাদময় ঘটনার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাস পর্যন্ত ফজরের নামাজের পর হত্যাকারী গোত্রসমূহকে বদদোয়া করেন। তিনি আরও বলেন, তখন থেকে সর্বপ্রথম কুনুতের সূচনা হয়, এটির পূর্বে আমরা কুনুত পাঠ করতাম না।’ সহিহ বুখারি মুসলিম শরিফে আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাস পর্যন্ত এই দোয়া পাঠ করেন, ‘হে মহান আল্লাহ! তুমি ওয়ালিদ ইবনে ওয়ালিদকে নাজাত দাও। হে মহান আল্লাহ! তুমি দুর্বল অসহায় মুমিনদের নাজাত দাও। হে মহান আল্লাহ! তুমি মুদার গোত্রের উপর তোমার আঘাতকে আরও কঠিন করো এবং তাদের উপর এই কঠোরতা যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রাখো, যেমন আমার মধ্যে এবং ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর মধ্যে অনেক যুগ অভিক্রান্ত হয়ে গেছে।’ তারপর একদিন এই দোয়া পাঠ বন্ধ করে দেন। আমি তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘দেখছো না এসব লোক তো এসেই গেছে।’

আরো পড়ুন : গাওয়া খন্দক আহজাব – Battle of the Trench

আরো পড়ুন : গাওয়া তাবুক – Battle of Tabouk

আরো পড়ুন : গাজওয়া আস-সাবিক – Invasion of Sawiq

সহিহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘ফজরের নামাজে যখন কেরাত পড়া শেষ হতো, তখন তিনি তাকবির বলে রুকুতে গমন করতেন, তারপর সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে মাথা উত্তোলন করে রাব্বানা লাকাল হামদ পাঠ করতেন এবং এই দোয়া পাঠ করতেন,

হে মহান আল্লাহ! তুমি ওয়ালিদ ইবনে ওয়ালিদ, সালামা ইবনে হিশাম, আইয়াশ ইবনে আবু রাবিআ এবং দুর্বল অসহায় মুমিনদের নাজাত দাও। হে মহান আল্লাহ! তুমি মুদার গোত্রের উপর তোমার আঘাতকে আরও কঠিন করো এবং এই কঠোরতা তাদের উপর যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রাখো, যেমন আমার ও ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর মধ্যে যুগের ব্যবধান৷ হে মহান আল্লাহ! তুমি লিহয়ান, রিল, যাকওয়ান ও উমাইয়্যা গোত্রসমূহের উপর অভিসম্পাত করো। তারা আল্লাহ ও তার রাসুলের নাফরমানি করেছে।’

আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তারপর আমরা জানতে পারলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বদদোয়া পাঠ বন্ধ করেছেন, তখন আয়াত অবতীর্ণ হয়, ‘তোমার কিছুই করার নেই। তিনি (আল্লাহ) হয় তাদের তাওবা কবুল করবেন, অন্যথায় তাদের শাস্তি প্রদান করবেন। কারণ তারা বড় জালেম।’[17]

এই বর্ণনা হতে এ-ও জানা গেল যে, এই উভয় দোয়ার সময়কাল ছিল একই, যদিও সাহাবিগণ কখনো শুধু দুর্বল সাহাবিগণের জন্য দোয়ার কথা উল্লেখ করেন, আবার কখনো শুধু কাফেরদের উপর অভিসম্পাত বর্ষণের বদদোয়ার কথা উল্লেখ করেন।

 আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর রেওয়ায়েত থেকে জানা যায়, এটি ছিল কুনুতের সূচনা৷ এর পূর্বে কখনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে এই ধরনের দোয়া পাঠ করেননি এবং এই উভয় বর্ণনা হতে এ-ও জানা গেল যে, এই ধরনের দোয়া পাঠের সময়সীমা এক মাসের অধিক ছিল না। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর রেওয়ায়েতে আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সময়সীমার পরেও এই ধরনের কুনুত পাঠ করেন।

ইমাম মুহাম্মাদ রহ. স্বীয় গ্রন্থ কিতাবুল আসার-এ উল্লেখ করেন, আবু হানিফা রহ. আমার নিকট হাম্মাদ থেকে এবং তিনি ইবরাহিম থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজে এক মাস কাল ব্যতীত তার পার্থিব জীবন থেকে তিরোধান পর্যন্ত আর কখনো কুনুত পাঠ করেননি। ওই সময় তিনি জীবিত মুশরিকদের উদ্দেশ্যে বদদোয়া পাঠ করেন। তিনি এর পূর্বে বা পরে কখনো কুনুত পাঠ করেননি।’ মুসনাদ ইমাম আজম রহ.-এর রেওয়ায়েতে এই বর্ণনার সনদ বিদ্যমান আছে, আবু হানিফা, তিনি ইবরাহিম থেকে, তিনি আলকামা থেকে এবং তিনি ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে। এই বর্ণনাসূত্র পরম্পরার প্রেক্ষিতে ইবনে আমিরুল হাজ উল্লেখ করেন, এই রেওয়ায়েত কোনো দোষে দুষ্ট নয়।

অন্যান্য হাদিসবিশারদগণও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে এই ধরনের রেওয়ায়েত করেন। তার ভাবার্থ হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজে আমৃত্যু কখনো কুনুত পাঠ করেননি, শুধুমাত্র এক মাস পাঠ করেন। এক মাস পর যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুনুত পাঠ বন্ধ করেন, তখন আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে এটির কারণ জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘দুর্বলদের জন্য দোয়া বন্ধ করা হয়েছে এজন্য, তারা তো ইতিমধ্যেই এসে গেছে। সুতরাং দোয়ার আর প্রয়োজন নেই এবং মুশরিকদের জন্য বদদোয়া বন্ধ করার কারণ হচ্ছে, আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেন, “তোমার করার কিছু নেই। তিনি (আল্লাহ) হয় তাদের তাওবা কবুল করবেন অথবা তাদের শাস্তি প্রদান করবেন। নিঃসন্দেহে তারা জালেম।”’[18] অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাদের উপর কুনুত পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

 আবু বকর সিদ্দিক রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর সময় মুসায়লামা কাযযাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি কুনুতের দোয়া পাঠ করেন। উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু আহলে কিতাবদের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার সময় কুনুতের দোয়া পাঠ করেন। আলি রাযিয়াল্লাহু আনহু এবং মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু পরস্পর যুদ্ধের সময় উভয়ই কুনুতের দোয়া পাঠ করেন এবং অনেক সাহাবিদের পরস্পর বিরোধী রেওয়ায়েতসমূহে কুনুত পাঠ এবং পাঠ না-করা উভয় প্রকারের বক্তব্য পাওয়া যায়। এসব রেওয়ায়েতের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হতে পারে, তারা সব সময় ফজরের নামাজে কুনুত পাঠ করতেন না; কিন্তু বিপদগ্রস্ত হলে তখন পাঠ করতেন। ইমাম আবু জাফর তাহাবি রহ. তার শরহু মাআনিল আসার গ্রন্থে নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণ করেন, উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু, আলি রাযিয়াল্লাহু আনহু, ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা প্রমুখ বিশিষ্ট সাহাবিগণের এই নীতি ছিল এবং এটির প্রমাণের জন্য অনেক রেওয়ায়েত পেশ করেন। এই কারণেই এই কথা বলা ঠিক, হানাফি আলেমগণ বিপদাপদের সময় কুনুত (নাজেলা) পড়ার পক্ষপাতী।

বাহরুর রায়েক গ্রন্থে গায়েতাহ থেকে বর্ণিত আছে, ‘যদি মুসলমানদের উপর কোনো বিপদ আপতিত হতো, তাহলে ইমাম যেসব নামাজে কেরাত উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করা হয়, তাতে কুনুত পাঠ করতেন এবং ইমাম সুফিয়ান সাওরি রহ. এবং ইমাম আহমাদ রহ.-ও এই মত ব্যক্ত করেন এবং অধিকাংশ আহলে হাদিসের মতে বিপদকালীন অবস্থায় সব নামাজেই কুনুত পাঠ করা শরিয়তসম্মত। আলি ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-সহ প্রসিদ্ধ সাহাবিগণ এই মত পোষণ করতেন। হানাফি ফকিহগণ বিপদের সময়ে কুনুতে নাজেলা পড়া সিদ্ধ মনে করেন।’

আরো পড়ুন : ইহুদি নেতা আবু রাফে-এর হত্যা অভিযান – Killing of Abu Rafi’

আরো পড়ুন : কাব ইবনুল আশরাফ হত্যা অভিযান – Killing of Ka’b ibn al-Ashraf

আরো পড়ুন : খাররার অভিযান – Expedition of al-Kharrar

আবদুল আলা ইবনে হাম্মাদের সূত্রে আনাস ইবনে মালিক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে দীর্ঘ এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বির মাউনার শহিদগণের হত্যাকারীদের জন্য এক মাস অবধি ফজরের নামাজে বদদোয়াস্বরূপ দোয়া কুনুত পড়ার কথা উল্লেখ আছে।

বির মাউনার করুণ কাহিনি মুসলমানগণের অবিচল ঈমানি চেতনা, অসীম বীরত্ব এবং খোদাদ্রোহী শক্তির বিশ্বাসঘাতকতার জ্বলন্ত উদাহরণ। ঈমানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সত্যপন্থিকে আল্লাহর রাহে অবিচল থাকার ও প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য এই ঘটনা অনুপ্রেরণা দেয়। অপরদিকে খোদাবিমুখ, বিশ্বাসঘাতক ও অত্যাচারী তাগুতি শক্তির প্রতি ঘৃণা ও কলঙ্কের কালিমা লেপন করে।

তথ্যসূত্র

[1]. ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মাআদ : ২/১১

[2]. বিশদ জানার জন্য জাওয়ামিউস-সিরাহ; সিয়ারু আলামিন নুবালা, খণ্ড : ১; তারিখ ইবনে খালদুন ইত্যাদি।

[3]. ইবনে হিশাম, আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা : ১৮৩

[4]. সহিহ বুখারি : ২/৫৮৬

[5]. ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মাআদ

[6]. আল-মুহাব্বার : ১১৮

[7]. আনসাবুল আশরাফ : ১/৩৭৫

[8]. সহিহ বুখারি : ২/৫৮৬; মাওলানা শিবলি নোমানি রহ. : ৩৯১-৯২

[9]. সহিহ বুখারি : ২/১৮৪

[10]. সিয়ারু আলামিন নুবালা : ১/১৭৪; ইবনে হিশাম, আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা : ৩/১৮৫

[11]. সুহাইলি : ৬/১৯১

[12]. মাওলানা শিবলি নোমানি রহ., প্রাগুক্ত : ৩৯০

[13]. আল-ওয়াকিদি, কিতাবুল মাগাজি : ১/৩৪৫-৪৭

[14]. ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মাআদ : ২/১০৯-১১; সহিহ বুখারি : ২/৫৮৪-৫৮৬; ইবনে হিশাম, আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা : ১৮৩-১৮৮; ইবনে কাসির : ১৩৯-১৪৪; তাবারি : ৩৩; ইবনু সায়্যিদিন নাস : ৪৬; শরহুল মাওয়াহিব : ২/৭৪, ৭৯

[15]. ইবনে সায়্যিদিন নাস

[16]. কিতাবুল মাগাজি

[17]. সুরা আলে ইমরান : ১২৮

[18]. সুরা আলে ইমরান : ১২৮

শেয়ার করুন

সূচীপত্র

error: Content is protected !!